বাপিবাবু বেশ এক্সাইটেড ... আমার ব্লগ-এ দুয়েকটা কমেণ্ট আসছে দেখে। প্রমথবাবুর ধারণা বাপিবাবু নিজেই কমেন্টগুলো করছেন - আমাকে উৎসাহ দেবার জন্যে। সেটা কি হতে পারে স্যার? না, না, বাপিবাবু ভদ্রলোক, আমাকে এভাবে ঠকাবেন না। সত্যিকথা বলতে কি আমি ব্লগ লিখছি নিজের তাগিদে - বাপিবাবুর এত পরিশ্রম করে লেখা কাহিনীগুলো যাতে পুরোপুরি জলে না যায়। ব্লগ-এ কমেন্ট না করে বাপিবাবুর বই কেউ কিনলেই আমি খুশি। তবে অস্বীকার কোরব না স্যার, কমেন্ট পেতে বেশ লাগে। আগের ব্লগ-এ জয়ন্তবাবুর কমেণ্ট (বইমেলায় সুপ্রীম-এর বুকস্টলে শান্তিনিকেতনে অশান্তি পাওয়া যায় নি) পড়ে প্রমথবাবু আমাকে একচোট ঝেড়েছেন। বলেছেন, 'বাপিতো বাজে লেখেই, কিন্তু ওর মার্কেটিং ম্যানেজার হিসেবে আপনি আরো বাজে। বই কোথায় পাওয়া যাবে সেটা আপনার বকবকানির মাঝে না রেখে প্রথমে রাখতে পারেন নি? দেখুনতো, ওর মাত্র একটা বই বিক্রি হবার যে সম্ভাবনাটা ছিল, সেটাও গেল'! যাক সে কথা, যা হবার তা হয়ে গিয়েছে।
এবার বাপিবাবু নিউ ইয়র্কের সোশালাইট বিপাশা মিত্র-র বিষ্ণুমুর্তি চুরির কেসটা নিয়ে লিখছেন। আমি দুয়েকলাইন পড়েছি - দেখলাম প্রমথবাবুর অনেক প্রশংসা আছে। যেই সেটা আমি প্রমথবাবুকে জানালাম, উনি সঙ্গে সঙ্গে আমাকে বললেন, "ব্যাটা নির্ঘাত্ টাকা ধার চাইবে বই ছাপানোর জন্যে। একটা পয়সাও আমি দেবো না।"
আমি জানি ইদানীং বাপিবাবুর পয়সার একটু টানাটানি চলছে, তাই বললাম, "কেন দেবেন না স্যার, বাপিবাবুর মত একজন ভালো লোককে?"
প্রমথবাবু বললেন, "ভালো লোকতো ত্রিগুণা সেনও ছিলেন।"
কথাটা শুনে আমি কনফিউসড। বললাম, "কথাটার অর্থ বুঝলাম না স্যার, একটু বুঝিয়ে বলুন।"
প্রমথবাবু বললেন, "আমার বাবা এককালে যাদবপুর ইউনিভার্সিটির ক্রিকেট টিম-এ ছিলেন। ওঁর এক বন্ধুকে টিম-এ চান্স দেবার জন্যে কোচ শিবুদাকে বলেছিলেন, 'টিমে নিয়ে নিন শিবুদা, ছেলেটা ভালো'। শিবুদা তার উত্তরে বলেছিলেন,'তাহলেতো ত্রিগুণা সেনকেও টিমে নিতে হয় (ত্রিগুণা সেন তখন যাদবপুরের রেক্টর)। ওঁর মতো ভাল লোক যাদবপুরে কে আছে'? এবার বুঝলেন?"
আমি হাঁ হয়ে আছি দেখে প্রমথবাবু বললেন, "বাপি যদি লেখক হত, আমি নিশ্চয় ধার দিতুম। এখনও দেবো যদি ও প্রমিস করে লেখার চেষ্টা ছেড়ে দেবে।"
আমি একটু চিন্তাতেই পড়েছি। বাপিবাবুর এত পরিশ্রম বোধহয় সত্যিই এবার মাঠে মারা যাবে - যদি না বাঙালী পাঠক ওঁকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন। বিশ্বাস করুন, স্টকে না থাকলেও যে কোনো বইয়ের দোকানে অর্ডার দিলে তারা শান্তিনিকেতনে অশান্তি কলেজ স্ট্রিটের 'দাশগুপ্ত এণ্ড কোং' থেকে আনিয়ে নিতে পারে। ১২৫ বছরের পুরনো দোকান এই দাশগুপ্ত কোম্পানী - সব বইয়ের দোকানই চিনবে। আর কি বলবো, আমার ভয় হচ্ছে এই বুঝি বাপিবাবুর শেষ......।
Thursday, February 10, 2011
Subscribe to:
Posts (Atom)