Monday, August 9, 2010

'শান্তিনিকেতনে আশান্তি' কোথায় বেরোচ্ছে?

নিজের মনে দিব্যি ব্লগ লিখছিলাম - ভাবিও নি যে কেউ পড়বেন। এখন দেখছি, শুধু পড়া না - দুজন কমেন্টও করেছেন। প্রশ্ন 'শান্তিনিকেতনে অশান্তি' কোথায় কবে বেরোচ্ছে। আরে স্যার, আমি কি সেটা জানি? বাপিবাবুকে জিজ্ঞেস করতে গিয়েছিলাম। দেখলাম একটু ব্যাজার। প্রমথবাবু বললেন,আমাকে নিয়ে ওঁর একটা লেখা নাকি সম্পাদক ফিরিয়ে দিয়েছেন তাতে সেক্স আছে বলে।
বাপিবাবু শুনে আপত্তি জানালেন, সেক্স নয়, সেক্স-ওয়ার্কার।
ওই হল, প্রমথবাবু বললেন, তুই নিজের পয়সায় দুশ কপি ছাপা - দুটাকা দাম কর। সেক্স থাকলে, আমি বইগুলো শিয়ালদায় বেচে দিতে পারব।
কি বোলবো স্যার, কথাটা শুনে বাপিবাবু এত চটে গেলেন যে, আমার প্রশ্নাটা আর জিজ্ঞেস করা হল না|

Tuesday, August 3, 2010

শান্তিনিকেতনে অশান্তি

বাপিবাবু এবারে খেপে গেছেন। আমার রহস্যভেদ নিয়ে পুরো একটা উপন্যাস লিখে ফেললেন! আমি বারবার বললাম, স্যার এতো সময় কেন নষ্ট করছেন, কে ছাপবে, আর ছাপলেও পড়বেই বা কে? উনি কি উত্তর দিলেন জানেন? বললেন, একেনবাবু, আমি লিখি নিজের তাগিদে, আপনার কীর্তি অক্ষয় করে রাখতে।
মিথ্যে কথা বোলব না স্যার, কথাটা শুনতে খুবই ভাল লেগেছিল। প্রমথবাবুকে বললাম, দেখুন স্যার, বাপিবাবু আমাকে কিরকম ভালবাসেন।
উনি বললেন, ভালবাসা না ছাই। ওর লেখক হবার ইচ্ছে আছে, কিন্তু কল্পনা করার ক্ষমতা নেই - তাই আপনাকে ধরেছে। আপনার দুর্ভাগ্য বাপি আপনার লিপিকার। যদি বা কেউ ভুল করে পড়ে - ছ্যা ছ্যা করবে।
কদিন আগে বাপিবাবু এসে সুখবর দিলেন, শান্তিনিকতনে অশান্তি নাকি ছাপাখানায় চলে গেছে - ২০১০-এই বেরবে। বাপিবাবু নিজে দশটা কপি কিনছেন। এখন প্রমথবাবুকে ধরেছেন একটা কপি কেনার জন্যে।

Monday, August 2, 2010

ম্যানহ্যাটানে মুনস্টোন

আমার প্রথম যে গল্প বাপিবাবু আনন্দমেলায় (১৯৯১ সালে) ছাপেন, সেটা হল 'ম্যানহ্যাটানে মুনস্টোন'। নিউ ইয়র্কে এক বন্ধুর সুত্রে আমি প্রথমে বাপিবাবুর বাড়িতে উঠেছিলাম। আমেরিকার আদবকায়দা তখন কিছুই জানতাম না (এখনো তেমন জানি না)। আমার ধারনা বাপিবাবু আর ওঁর রুমমেট প্রমথবাবু - দুজনেই আমার ব্যবহারে বিরক্ত হতেন। আমি নাকি বেশি 'স্যার স্যার'
বলি, বাজে বকবক করি, বোকার মত প্রশ্ন করি - বাপিবাবু, বিশেষ করে প্রমথবাবু এ নিয়ে আমাকে অনেক বকাবকি করেছেন। কিন্তু এতদিনের হ্যাবিট কি একদিনে পাল্টানো যায়? আমি যে গোয়েন্দা ওঁরা জানতেন না, তাই যখন মুনস্টোন নিয়ে একটা মার্ডারের রহস্য আমি সমাধান করলাম - তখন ওঁরা সত্যিই অবাক হয়েছিলেন। ম্যানহ্যাটানে মুনস্টোনের পরে যে কান্ডটার সাঙ্গে আমি জড়িয়ে পড়লাম, সেটাকে 'ম্যানহ্যাটানে ম্যানহান্ট' বলে বাপিবাবু আনন্দমেলায় ছাপালেন। পরে সুপ্রীম পাবলিশার্স সে দুটো গল্প একত্র করে বই হিসেবে বার করে। কিছুদিন এই ভাবে চলল। মুশকিল হল এরপর যে-সব কেস হাতে আসতে লাগলো, সেগুলো কিশোর-কিশোরীদের পড়ার উপযুক্ত নয়। বাপিবাবু পড়লেন মুশকিলে। বহুদিন বাদে যখন 'সুখি গৃহকোণ' যখন রহস্যকাহিনী ছাপা শুরু করল, তখন বাপিবাবু ওঁর লেখা ছাপার একটা জায়গা পেলেন। বাপিবাবু বললেন, এখন থেকে আপনি নতুন একেন - আপনার কীর্তিকলাপ সব বড়দের জন্যে ছাপা হবে।

খুনের আগে খুন

অনিতামাসি ফোন করেছিলেন, একটা বিশেষ দরকারে সাহায্য চান।
আমি বাপিবাবুকে জিজ্ঞেস করলাম, উনি ফ্রি আছেন কিনা।
কেন, জিজ্ঞেস করায় অনিতামাসির কথা বললাম। বাপিবাবু বললেন ডেকেছেনতো আপনাকে আমাদের এর মধ্যে জড়াচ্ছেন কেন?
আমি বললাম, কিযে বলেন, আপনারা ছাড়া আমি অচল।
প্রমথবাবু রন্নাঘরে ছিলেন, সেখান থেকেই বললেন, একটু ঝেড়ে কাশুন না মশাই। ভাব দেখাচ্ছেন আমাদের সাহায্য ছাড়া আপনি রহস্যভেদ করতে পারবেন না| আসলে দরকার হচ্ছে শুধু বাপির গাড়ি। ট্যাক্সিতে উঠবেন না পয়সা খর্চা হবে বলে।
শুনছেন স্যার, প্রমথবাবুর কথা, আমি বাপিবাবুর সাপোর্ট চাইলাম।
চুপ কর তুই, সব কিছুই বাঁকা ভাবে দেখা তোর স্বভাব।
বেশ করি দেখি, তুই আর আমাকে জ্ঞান দিস না| যা না, বেচে ফেল তোর গাড়ি, দেখি কত ডাক পড়ে তোর !
আমার খেয়েদেয়ে কাজ নেই, তুই ঠিক না ভুল প্রমাণ করতে গাড়ি বেচতে হবে। তোরতো গাড়ি নেই, তোকে কেন ডাকেন একেনবাবু?
সেটা ভদ্রতায় বাধে বলে।
প্রমথবাবু বাইরে যাই বলুন না কেন, ওঁর মনটা ভালো।
সেদিন অনিতামাসির বাড়িতে গিয়ে একটা দারুন ইন্টারেস্টিং কেসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলাম। বাপিবাবু 'খুনের আগে খুন' নাম দিয়ে গল্পটা কলকাতায় ছপিয়েছেন। নামটা অর্থহীন মনে হতে পারে, কিন্ত খুন ব্যাপারটাইতো আর্থহীন।

গ্রিনিচ কান্ড

কদিন আগে টিভি-তে একটা দারুন প্রোগ্রাম দেখলাম - গ্রিনিচে বড়লোকদের কান্ট্রিহোম। আমি বাপিবাবুকে বললাম, বুঝলেন স্যার, শহরের মধ্যে থেকে থেকে একেবারে হাঁফিয়ে উঠেছি - কয়েকদিন কান্ট্রিসাইডে গিয়ে থাকলে হত। বাপিবাবু পাত্তা দিলেন না। আরো বার দুয়েক প্রসঙ্গটা তুলতে, প্রমথবাবু খ্যাঁক খ্যাঁক করে বললেন, আমাদের উত্তক্ত করছেন কেন, ইচ্ছে হলে চলে যান। অজস্র হোটেল আছে, কদিন সেখানে কাটিয়ে আসুন|

একসঙ্গে না যেতে পারলে আনন্দটা কোথায়! প্রমথবাবুকে সেটা বলতেই বললেন, আমাদের সংগ এত ভালো লাগলে আমাদের হোটেলের ভাড়া দিয়ে দিন, আসবো।
আচ্ছা, এটা কোন কাজের কথা হল?
পরে ভাগ্যচক্রে সেই গ্রিনিচেই যাওয়া হল, আর একটা দারুন মার্ডার কেস হাতে এল। বাপিবাবু সেই গল্প ছাপালেন। শুধু তাই নয় - কলকাতার বিখ্যাত পাবলিশার্স এ.মুখার্জি কোম্পানীর রঞ্জন সেনগুপ্ত গ্যাসলাইট মিস্ট্রি সিরিজ নাম দিয়ে একটা পকেটবুক সিরিজ শুরু করেছেন, সেখানে নাকি আমার নামে একটা বইও ছাপান হায়েছে| তাতে এই গল্পটা আছে|